ভারতে সবচেয়ে বড় শহর এবং সাংস্কৃতিক রাজধানী কলকাতা। বাংলাদেশি পর্যটকদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে পশ্চিম বঙ্গের এই শহরটি। চিকিৎসা, ব্যবসা ও কেনাকাটার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশিরা কলকাতায় বেশি ভ্রমণ করেন।

মাত্র ৩ দিনের ছুটিতে ঘুরে আসতে পারেন কলকাতা থেকে। সড়ক, রেল ও আকাশ পথে কলকাতায় যাওয়া যায়। সড়ক ও রেলপথে কলকাতায় যেতে সময় লাগে ১২ ঘণ্টার বেশি। সঙ্গে রয়েছে নানা রকম ঝক্কি ঝামেলা।

তাই তো সাধ্যের মধ্যে মাত্র ৪০ মিনিটে আকাশ পথে ঝামেলাহীন ভাবে কলকাতায় যেতে পারেন আপনিও। হোটেলও বুকিং দিতে পারেন বাংলাদেশ থেকেই। আপনার জন্য হালট্রিপ দিচ্ছে এয়ার টিকিট, হোটেল বুকিং এর সুবিধা।

জেনে নিন কলকাতা ঘুরতে গেলে যে ৭টি দর্শনীয় স্থান অবশ্যই ঘুরে আসবেন।

কফি হাউজ

গানে মনে হয়েছিল কফি হাউসের চারদিক হবে খোলামেলা। সবুজের ছায়ায় মিলবে কফির পেয়ালায় চুমুক দেওয়ার সুযোগ। বাস্তবে পুরোটাই উল্টো। পুরোনা একটি ভবন। সিঁড়ি দিয়ে দোতলায় উঠতেই নানা বয়সের মানুষের আড্ডা। এসেছেন পর্যটকরাও। দরজা দিয়ে ঢুকতেই মুখোমুখি কাউন্টার। পেছনে বিশাল বোর্ডে খাবারের দরদাম।

সাদা শার্ট-প্যান্ট, কোমরে লাল বেল্ট, মাথায় টুপি পরনে ওয়েটাররাও অনেক ব্যস্ত। এখানকার কফি ও কাটলেটে রয়েছে ভিন্নতা। নিয়ন আলোয় আলোকিত ‘ডুপ্লেক্স’ কফি হাউজ। চলছে তিন পাখার ফ্যান। উপর তলায় বসলে কফি হাউসের পুরো ভিউটা একসাথে দেখা যায়। সন্ধ্যায় আড্ডা বেশি জমে।

ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল

ঘাট বাঁধানো পুকুর, সারি সারি গাছ, সবুজ মাঠের মাঝে বড় অট্টালিকা। এ নিয়েই ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল। মোঘল এবং ব্রিটিশ স্থাপত্যের অনন্য নিদর্শন ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল। প্রসাদের মত বিশাল অট্টালিকায় রয়েছে ২৫টি গ্যালারি। যেখানে বিভিন্ন এন্টিক নিদর্শন এবং হস্ত নির্মিত শিল্পকর্ম প্রদর্শনের জন্য রাখা হয়েছে।

জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি

কলকাতার জোড়াসাঁকোতে অবস্থিত ঠাকুর পরিবারের প্রাচীন বাড়ি ‘জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি’। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দাদা এই বাড়ি নির্মাণ করেন। ঠাকুর পরিবারের স্মৃতি বিজড়িত বাড়িটি এখন রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। এই বাড়িতেই জন্মগ্রহণ করেছিলেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। বাড়ির একটি অংশে রয়েছে জাদুঘর। যেখানে ঠাকুর পরিবারের নানা ঐতিহ্য প্রদর্শনের জন্য রাখা রয়েছে।

 

হাওড়া ব্রিজ

বিশ্বের ষষ্ঠ দীর্ঘতম ক্যান্টিলিভার ব্রিজ ‘হাওড়া ব্রিজ’। ব্রিটিশ শাসনামলে হুগলি নদীর উপর এ ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়। যা কলকাতা ও হাওড়া শহরের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করে। ব্রিজের পাশের লঞ্চঘাট থেকে নৌকায় ঘুরতে পারেন হুগলি নদী। উপভোগ করতে পারেন হাওড়া ব্রিজের সৌন্দর্য।

মাদারস ওয়াক্স মিউজিয়াম

শাহরুখ, অমিতাভের সঙ্গে সেলফি তুলতে চান? ঘুরে আসতে পারেন মাদারস ওয়াক্স মিউজিয়াম থেকে। তাদের সঙ্গে দেখা হতে পারে মহাত্মা গান্ধী, মাদার তেরেসা, ম্যারাডোনাসহ সুপারম্যান কিংবা মোট পাতলুর মোমের মূর্তির সঙ্গে। মান্না দে, আরডি বর্মন, লতা মুঙ্গেশকরের পাশে রাখা হেডফোনে গানও শুনতে পারেন। কলকাতার নিউ টাউনে অবস্থিত মাদারস ওয়াক্স মিউজিয়ামে রয়েছে ৫০টিও বেশি মূর্তি।

সাইন্স সিটি

একপলকে বিজ্ঞানের নানা দিক দেখে আসতে পারেন সাইন্স সিটি থেকে। এখানে রয়েছে প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে বর্তমান যুগের নানা জীবজন্তুর মূর্তি। যা জীবন্ত প্রাণীর মতোই নড়াচড়া করে এবং শব্দ করে। এছাড়াও রয়েছে বিজ্ঞানের নানা দিক নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্র দেখার সুবিধা। ক্যাবল কার দিয়ে পুরো সাইন্স সিটি দেখা সুযোগ তো রয়েছেই।

একুশে উদ্যোন

কলকাতায় ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল যাওয়ার পথেই একুশে উদ্যান। ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’ – অমর এই গানের থিমে এই উদ্যানটি তৈরি করা হয়েছে। শহরের বিড়লা প্লানেটোরিয়ামের পাশেই এটি অবস্থিত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *