মালয়েশিয়ার জাতীয় পতাকাবাহী বিমান সংস্থা মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্স। মালয়েশিয়া যেতে, মালয়েশিয়া থেকে অন্য কোথাও যেতে কিংবা মালয়েশিয়ার ভেতরে ভ্রমণের জন্য সবচেয়ে ভালো এয়ারলাইন্স হচ্ছে মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্স।
মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্স বিশ্বব্যাপী দৈনিক প্রায় ৪০,০০০ যাত্রী বহন করে থাকে। এই এয়ারলাইন্সের একটি ভ্রমণ আপনাকে আকাশপথেই মালয়েশিয়ার সমৃদ্ধ ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, রান্না এবং উষ্ণ আতিথেয়তা সহ দেশটির বৈচিত্র্যের স্বাদ দিতে সক্ষম।
২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর থেকে এয়ারলাইন্সটি পরিচালনা করে আসছে মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্স বেরহাদ। ওয়ান ওয়ার্ল্ড নামের সংস্থার সাথে সম্মিলিত ভাবে এই প্রতিষ্ঠানটি ১৫০টির বেশি দেশের ১০০ টি গন্তব্যে যাত্রীসেবা দিয়ে চলছে। সারাবিশ্বে ৬৫ টির বেশি বিমানবন্দরে মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ রয়েছে। ২০১৬ সালের প্রথমদিকে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের সাথে কোডশেয়ার পার্টনারশিপের মাধ্যমে এশিয়া, আফ্রিকা, আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের ৯০টি গন্তব্যে বিশেষ সেবা চালু করেছে এই বিমান সংস্থাটি।
অন্য যেকোনো এয়ারলাইন্সের মতই মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটও তিনটি শ্রেণীতে বিভক্ত- বিজনেস সুইট, বিজনেস ক্লাস, ইকোনমি ক্লাস। তিন শ্রেণীতে বিভক্ত মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের কিছু বিস্তারিত তুলে ধরবো আজকেই এই পোস্টে।
বিজনেস সুইট
আয়েশি ইচ্ছা পূরণের ফ্লাইট মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্স
মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের বিজনেস সুইট বুক করে থাকলে প্রস্তুত থাকুন আভিজাত্যপূর্ণ, বিলাসবহুল ও আতিথেয়তাপূর্ণ একটি ভ্রমণের জন্য। বিশাল জায়গা জুড়ে থাকা সুইটে আরাম করে বসে পড়ুন। পর্যাপ্ত ফাঁকা জায়গা, ডেস্ক সবই থাকবে এই সুইটে। আপনার প্রত্যাশিত সবটুকু গোপনীয়তা নিশ্চিত করবে মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্স। বসার চেয়ারে থাকছে ইলেক্ট্রনিক কন্ট্রোল, চাইলেই বাটন টিপে বসার জন্য বা শোয়ার জন্য এডজাস্ট করে নিতে পারবেন খুব সহজে।
বিনোদনের ভিন্ন একটি জগত
পর্যাপ্ত পরিমাণ মুভি, টিভি সিরিজ থেকে বেছে নিতে পারবেন পছন্দেরটি। হাজারো গানের সংগ্রহ থেকে বাছাই করে নিজেই প্লেলিস্ট বানিয়ে শুনতে পারবেন টাচ স্ক্রিন মনিটরে।
নির্বিঘ্ন শান্তিপূর্ণ ঘুম
আপনি যখন লম্বা একটি ঘুমের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন একবার শুধু কেবিন-ক্রু কে ডেকে বলুন। হাসিমুখে আপনার বিছানা প্রস্তুত করে দেবে প্রশিক্ষিত মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্স ক্রু। তুলতুলে নরম ম্যাট্রেস, বিশাল বালিশ ও মেঝে পর্যন্ত বেয়ে পড়া কম্বল- মনে হবে যেন পাঁচ তারকা হোটেলের কোন রুম।
বিজনেস ক্লাস
উষ্ণ অভ্যর্থনা
ফ্লাইটে পা রাখলেই উপভোগ করতে শুরু করবেন প্রশান্ত একটি পরিবেশ যার শুরু হবে বিশ্বমানের কেবিন ক্রুদের অভ্যর্থনা দিয়ে। এক টাইমজোন থেকে আরেকটি টাইমজোনে প্রবেশের সময় যাতে আপনার অস্বস্তিবোধ না হয় সে জন্য মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সে রয়েছে কৃত্তিম ভাবে দিন বা রাতের আলো তৈরি করার ব্যবস্থা।
ব্যক্তিগত কমফোর্ট জোন
আপনার জিনিসপত্র সরিয়ে রাখার জন্য বিজনেস ক্লাসে পাচ্ছেন সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত স্টোরেজ এরিয়া। পছন্দ মত সিট এডজাস্ট করে ডুবে যান প্রশান্ত এই আকাশ ভ্রমণে।
পুরোপুরি ব্যবসার জন্য উপযুক্ত
প্রয়োজন হলে বিজনেস ক্লাসের এই সিটকে আপনি মিনি অফিসে রূপান্তরিত করতে পারবেন। মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের প্রশিক্ষিত কর্মীরা আপনার মনোযোগে কোন প্রকার ব্যাঘাত না ঘটিয়েই আপনার সকল প্রয়োজন মিটিয়ে যাবে।
যেকোন সময় খাবার
মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের বিজনেস ক্লাসে রয়েছে ডাইন এনিটাইম সার্ভিস। তার মানে আপনার যখনই খেতে ইচ্ছে করবে আপনি নিজের পছন্দের খাবার অর্ডার করতে পারবেন।
বেছে নিন আপনার বিনোদন
বিজনেস সুইটের মতই এখানেও আপনি পাবেন পছন্দ মত মুভি কিংবা গান বেছে নেয়ার সুযোগ। মিউজিকের স্বাদ আরও বাড়াতে পাচ্ছেন নয়েজ ক্যান্সেলিং হেডফোন।
ইকোনমি ক্লাস
মনে হবে যেন নিজের ঘর
আপনি যে শ্রেণী বা পেশার মানুষই হন না কেন মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের প্রশিক্ষিত কেবিন ক্রুদের আতিথেয়তায় আপনার মনে হবে আপনি নিজের ঘরেই আছেন।
ইকোনমি হলেও আরামে কোন কমতি নেই
তুলনামূলক কম খরচেই মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্স নিশ্চিত করবে আপনার সর্বোচ্চ আরাম। ইকোনমি ক্লাসের টিকিটের সাথেই পাচ্ছেন বিনামূল্যে বিশেষ লাগেজ বহনের সুযোগ এবং চমৎকার খাবার।
প্রথম শ্রেণীর বিনোদন ব্যবস্থা
ঠিক প্রথম শ্রেণীর মতই ইকোনমি ক্লাসেও রয়েছে মুভি ও গান নিজের পছন্দে উপভোগ করার সুযোগ।
খাবার পছন্দ করার সুযোগ
খাবারের ব্যাপারকে মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্স সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে। পৃথিবীর সকল শ্রেণীর মানুষের খাবারের রুচি ও অভ্যাসের কথা মাথায় রেখে ভারি ও মসলাদার খাবার থেকে শুরু করে স্বল্প লবণে প্রস্তুত করা নিরামিষ পর্যন্ত প্রায় সব ধরনের খাবারই পাবেন এই বিমানে। আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হল মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের সকল খাবার ইসলাম ধর্ম অনুসারে হালাল।